কি কি কাজ করলে শিরক হয় ?
শিরক সম্পর্কে জানলেন না তো আপনার এ জীবন-ই বৃথা! নামাজ, রোজা, হজ্জ,দানের মতো বড় বড় ইবাদতকে এটা ধ্বংস করে দেয়। আর শেষ ফলাফল হলো স্থায়ী ভাবে জাহান্নামে অবস্থান।
🔘আল্লাহ্ ব্যাতিত অন্য কারো নামে কসম করা শিরক।
__(আবু দাউদ :৩২৩৬(ইফা)
🔘কোন কিছুকে শুভ-অশুভ লক্ষণ বা কুলক্ষণ মনে করা শিরক।
__(বুখারি:৫৩৪৬,আবু দাউদ:৩৯১০)
🔘মাজার ও কোন পীর-ফকির কিংবা কারো নিকট সিজদা দেয়া শিরক।
__(সূরা জীন:২০,মুসলিম :১০৭৭,আবু দাউদ, মুওাফাকুন আলাই)
🔘আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো বা যেকোন পীর-আওলিয়া কিংবা মাজারের নামে মানত করা শিরক।
__(সহীহ বুখারি:অধ্যায়:তাকদির)
🔘কেউ পেছন দিক থেকে ডাক দিলে কিংবা নিজে যাএার সময় পিছন ফিরে তাকালে যাএা অশুভ হয় এই ধারণা বিশ্বাস করা শিরক।
__(বুখারি,আবু দাউদ :৩৯১০)
🔘কোন বিপদে পড়ে আল্লাহকে বাদ দিয়ে “ও মা,ও বাবা” ইত্যাদি বলে এই রকম গায়েবি ডাকা শিরক। বিপদে পড়লে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন” বলতে হয়।
__(সূরা বাকারাহ:১৫৬)
🔘তোর ভবিষ্যত অন্ধকার,’তোর কপালে বহুত কষ্ট আছে, এই ধরনের গায়েবি কথা কাউকে বলা শিরক।
__(সূরা নমল:৬৫,আল জিন :২৫-২৬,আনাম:৫৯)
🔘হোঁচট খেলে কিংবা পেচা ডাকলে সামনে বিপদ আছে এই ধারনা শিরক।
__(সূরা আনাম:১৭,ইউনুস :১০৭)
🔘রোগ ব্যাধি বা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে শরীরে পিতলের বালা, শামুক, ঝিনুকের মালা, সুতা, কিংবা যেকোন প্রকারের বস্ত লটকানো শিরক।
__(তিরমিযী, আবু দাউদ ও হাকেম)
🔘সকালে বেচাকেনা না করে কোন কষ্টমারকে বাকি দিলে কিংবা সন্ধ্যার সময় কাউকে বাকি দিলে ব্যাবসায় অমঙ্গল হয় এই ধারনা করা শিরক।
__(আবু দাউদ :৩৯১০)
🔘সফলতা কিংবা মঙ্গল লাভের জন্য এবং অমঙ্গল থেকে রক্ষা পেতে যেকোন প্রকার আংটি ব্যবহার করা শিরক।
__(সূরা আনাম:১৭,ইউনুস:১০৭)
🔘যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন করা শিরক।
যেমন:পতাকা,স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি।
__(সূরা বাকারাহ:৩২৩৮,আহকাফ:৫,ফাতহুল বারি ৭/৪৪৮,আবু দাউদ :৪০৩৩)
🔘আল্লাহর ছাড়া অন্য কারো সন্তষ্টি অর্জনের জন্য কিংবা লোক দেখানো ইবাদত করা শিরক।
__(সূরা আনাম:১৬২,বাইয়িনাহ:৫,কাহফ:১১০,ইমরান:৬৪,ইবনে মাজাহ হা নং ৫২০৪)
🔘আল্লাহ্ ব্যাতিত কোন গনক বা অন্য কেউ গায়েবে জানে এই কথা বিশ্বাস করা শিরক।
__(সূরা নমল:৬৫,আল জিন:২৬,আনাম:৫৯)
🔘পায়রা/কবুতর উড়িয়ে শান্তি কামনা করা শিরক, কারণ শান্তিদাত একমাত্র আল্লাহ্
__(সূরা হাশর:২৩)
🔘আল্লাহর ছাড়া কোন পীর আওলিয়া এবং কোন মাজারের নিকট দোয়া করা বা কোন কিছু চাওয়া শিরক।
__(সূরা ফাতিহা :৪আশ
শোআরা:২১৩,গাফির:৬০,তিরমিযী)
🔘”আপনি চাইলে এবং আল্লাহ্ চাইলে এই কাজটি হবে”এই কথা বলা শিরক।
–(নাসাঈ শরিফ) এখানে শুধু আল্লাহ্ চাইলে হবে, বলা যেতে পারে।
এইরকম আরো অসংখ্য শিরক সমাজে বিদ্যামান।
আল্লাহ্ বলেন, অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে,কিন্তু সাথে শিরকও করে।
__(সূরা ইউসুফ :১০৬)
মনে রাখবেন,,
শিরক এমন একটি গুনাহ যা করলে ঈমান এবং পূর্বের সমস্ত আমল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ যেকোন গুনাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না।
আল্লাহ্ বলেন,,
নিসন্দেহে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে যেকোন গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।
__(সূরা নিসা :৪৮,১১৬)
নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং জাহান্নামকে অবধারিত করে দেন।
__(সূরা মায়িদাহ:৭২)
রাসুল্লাহ্ (সাঃ)বলেছেন,,
“আমার সামনে জিব্রাঈল আবির্ভৃত হলেন,তিনি বললেন,আপনি আপনার উম্মতদের সুসংবাদ দিন,যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মারা যাবে,সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম,যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে?তিনি বললেন:যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে।
__(সহীহ বুখারি:১২ ৩৭,মুসলিম :৯৪)
শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধ্বংসাত্মাক বিষয়, শত পাপ করলেও কিয়ামতের দিন তা ক্ষমার সম্ভবনা আছে কিন্তু শিরকের পাপ ক্ষমার কোন সম্ভবনাই নেই এবং তা নিসন্দেহে জাহান্নামে নিয়ে যাবে।
আল্লাহ্ সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুন। আমিন ৷
Copied