*السَّـــــــلَامُ عَلَيــْــكُمْ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَـــاتُهُ*
(আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু)
*بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحَيْمِ*
(শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু)
প্রশ্নঃ- ইসলামের দৃষ্টিতে বিড়াল প্রতিপালন করার বিধান কি?
উত্তরঃ- ইসলামের দৃষ্টিতে বিড়াল প্রতিপালনে কোন বাধা নাই। তবে বিড়ালকে পর্যাপ্ত খাদ্য-পানীয় সরবরাহ করতে হবে এবং তার প্রতি দয়া করতে হবে। তাকে কষ্ট দেয়া বা তার উপর জুলুম-অত্যাচার করা যাবে না। অন্যথায় গুনাহগার হতে হবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এক মহিলা বিনা কারণে একটি বিড়ালকে বন্দী রেখে না খাইয়ে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলার কারণে জাহান্নামি হয়েছে।
আব্দুল্লাহ রা. হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَسَقَتْهَا إِذْ حَبَسَتْهَا وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ
“এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য আজাব দেয়া হয়েছে এজন্য যে, সে বিড়ালটিকে আটকে রাখায় সেটি সেটি মারা গিয়েছিলো। ফলে সে জাহান্নামে গেছে। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিলো কিন্তু নিজেও তাকে খাবার-পানীয় দেয় নি আবার ছেড়েও দেয় নি যে, সে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে।" [সহীহ মুসলিম, হা/৫৭৪৫, অধ্যায়: সালাম, পরিচ্ছদ: বিড়াল হত্যা করা হারাম-হাদিস একাডেমি]
• কুকুর, বিড়াল, মুরগি, পাক-পাখালি সহ আল্লাহর যে কোনও সৃষ্টির প্রতি দয়া করলে এবং তাদেরকে খাবার-পানীয় দান করলে দয়াময় আল্লাহও দয়া করেন এবং দান করেন অজস্র সওয়াব। (সুবহানাল্লাহ! ইসলাম কতই না মহান জীবনাদর্শ!)
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
الرَّاحِمُونَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمَنُ ارْحَمُوا أَهْلَ الْأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ
"দয়াশীলদের উপর দয়াময় আল্লাহও দয়া করেন। তোমরা জমিনের অধিবাসীদের প্রতি দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদেরর প্রতি দয়া করবেন।"
[সুনান আবু দাউদ, ৩৬/ শিষ্টাচার, পরিচ্ছেদ: ৬৬. দয়া সম্পর্কে, হা/৪৯৪১]
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَإِنَّ لَنَا فِي هَذِهِ الْبَهَائِمِ لأَجْرًا فَقَالَ " فِي كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ
(সাহাবীগণ) প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রসূল, পশুপাখিদের মধ্যেও আমাদের জন্য সওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, "প্রতিটি তাজা কলিজায় সওয়াব রয়েছে।" [সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ৪০-সালাম, পরিচ্ছেদ: ৪১. যে কোন পশু-পাখিকে পান করানো ও খাবার দেয়ার ফজিলত]
এ ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তার ওজুর পাত্র থেকে পানি পান করানো এবং সাহাবী আবু হুরায়রা রা. এর বিড়াল প্রীতির কথা প্রসিদ্ধ।
আল্লাহু আলাম।
_*আরও পড়ুন:*_
_*নিরাপরাধ বিড়াল হত্যা করার গুনাহ এবং তার কাফফারা:*_
*প্রশ্নঃ- কেউ ব্যক্তি যদি কোনও বিড়াল হত্যা করে তাহলে কি তার কোন কাফফারা আছে? এ ক্ষেত্রে তার কী করণীয়?*
*উত্তরঃ-* ইসলামের দৃষ্টিতে বিশেষ কয়েকটি প্রাণী ছাড়া সব ধরণের প্রাণীকে বিনা কারণে হত্যা করা হারাম।
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, এক মহিলা বিনা কারণে বন্দী অবস্থায় না খাইয়ে কষ্ট দিয়ে একটি বিড়ালকে মেরে ফেলার কারণে জাহান্নামী হয়েছে। যেমন আবদুল্লাহ রা. হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَسَقَتْهَا إِذْ حَبَسَتْهَا وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ
“একজন মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য আযাব (শাস্তি) দেয়া হয় এজন্য যে, সে বিড়ালটিকে আটকে রেখেছিল, পরিশেষে সেটি মারা গেল। যার জন্য সে জাহান্নামে গেল। যে মেয়ে লোকটি বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছে, নিজেও পানাহার করায়নি আর সেটিকে সে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে। (সহীহ মুসলিম, হা/5745,অধ্যায়ঃ সালাম (كتاب السلام)-পরিচ্ছদঃ বিড়াল হত্যা করা হারাম-হাদীস একাডেমী)
তবে কেউ যদি নিরাপরাধ কোন বিড়ালকে মেরে ফেলে তাহলে তার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহর নিকট তওবা করা আবশ্যক। সেইসাথে আর কখনো যেন এমন না করে সে জন্য আল্লাহর নিকট অঙ্গীকার করবে। তাহলে আশা করা যায়, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। এতে তার জন্য আলাদা কোন কাফফারা নেই। আল্লাহু আলাম।
الله أعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব ।
সংগৃহীত ও জনস্বার্থে প্রচারিত।
No comments:
Post a Comment