Monday 11 May 2020

সংক্ষিপ্ত যাকাতের মাসাইল

সংক্ষিপ্ত যাকাতের মাসাইল
=========  ===  =======

"নামাজ, রোজার মতই যাকাত দেওয়া ফরজ"
* যাদের উপর জাকাত ফরজ *
 পূর্ণবয়স্ক মুসলিম নর-নারী-যার কাছে সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর নেসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সে সম্পদের উপর এক বছর অতিবাহিত হয়েছে, তার উপর যাকাত ফরজ।
★যে জিনিসের উপর যাকাত ফরজ হয়
সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার মালে (পণ্যে) যাকাত ফরয হয়।
★স্বর্ণের নেসাব সাড়ে সাত তোলা। রুপার নেসাব সাড়ে বায়ান্ন তোলা।
প্রয়োজনের উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা বা ব্যবসায়িক মালের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয়, তাহলে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে ধরা হবে এবং এর যাকাত দিতে হবে।
★যে সম্পদের ওপর যাকাত ওয়াজিব, তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (২.৫০ শতাংশ) জাকাত দেওয়া ওয়াজিব।
★সর্বনিম্ন কত টাকার মালিক হলে যাকাত ওয়াজিব হয়।
বর্তমান বাজারে ভরি প্রতি রূপার মূল্য ৭৫০ টাকা। মানভেদে কিছু কম বা বেশিও হয়। তাই আনুসাঙ্গিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে রূপার মূল্য ভরি প্রতি মোটামুটি ৭৬২ টাকা ধরে সাড়ে ৫২ ভরি রূপার মূল্য আসে ৪০,০০৫ (চল্লিশ হাজার পাঁচ) টাকা।
অতএব, কেউ যদি ঋণমুক্ত হওয়া অবস্থায় সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর সর্বনিম্ন ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা বা এর সমপরিমাণ মূল্যমানের ব্যবসায়িক মালের মালিক হয়, তাহলে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
*হিসাব করে শতকরা আড়াই টাকা/হাজারে ২৫ টাকা/লাখে আড়াই হাজার টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে যাকাত আদায় করতে হবে।
অতএব ৪০ হাজার টাকায় ১০০০/- (এক হাজার) টাকা। এক লাখে ২,৫০০/- টাকা যাকাত আসবে জনাব মুহতারাম "জামিয়া শায়খ যাকারিয়্যা ঢাকা"  -------------------------------- 
 

              যাকাতের বিস্তারিত মাসাইল
            =====================

الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد الأنبياء والمرسلين أما بعد:
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি স্তম্ভ হলো জাকাত। জাকাত মহান আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা ফরজ করে দিয়েছেন।
والزكاة أمر مقطوع به في الشرع يستغني عن تكلف الاحتجاج له، وإنما وقع الاختلاف في بعض فروعه، وأما أصل فرضية الزكاة فمن جحدها كفر.
‘জাকাত শরিয়তের এমন এক অকাট্য বিধান, যে সম্পর্কে দলিল-প্রমাণের আলোচনা নিষ্প্রয়োজন। জাকাত সংক্রান্ত কিছু কিছু মাসআলায় ইমামদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকলেও মূল বিষয়ে অর্থাৎ জাকাত ফরজ হওয়া সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই। জাকাতের ফরজিয়তকে যে অস্বীকার করে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।’
ফাতহুল বারি, ৩/৩০৯
তবে জাকাত নামাজ-রোজার মতো সকলের উপর ফরজ নয়। জাকাতের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে এবং ফরজ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে।
ইনশাআল্লাহ আজকের এই প্রবন্ধে জাকাত সংক্রান্ত সমৃদ্ধ একটি আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

★জাকাতের সংজ্ঞা : জাকাত শব্দের অর্থ শুচিতা , পবিত্রতা শুদ্ধি ও বৃদ্ধি।
পরিভাষায় : মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অংশ নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিদেরকে মালিক বানিয়ে দেওয়ার নাম জাকাত।

★জাকাত আদায়ের উপকারিতা :
১) গরীবের প্রয়োজন পূর্ণ হয়। ২) ক্রমান্বয়ে পুঁজিতন্ত্রের মূলোৎপাটন হয়। ৩) জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ কুক্ষিগত করার মানসিকতা শেষ হয়ে সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য সৃষ্টি হয়।৪) গরীব-ধনীর মাঝে সেতুবন্ধন সৃষ্টি হয়।
৫) সম্পদে বরকত হয় এবং সম্পদ বৃদ্ধি পায়। ৬) জাকাত প্রদান করলে হৃদয়ের মাঝে গরীব-মিসকিন ও অভাবী মানুষের প্রতি মায়া-মমতা সৃষ্টি হয়। ৭) কৃপণতার মতো চরম নিন্দিত ও অসৎ গুণ জাকাতের মাধ্যমে দূরীভূত হয়। ৮) সর্বোপরি মহান আল্লাহর বিধান পালন করার মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।

★জাকাত আদায় না করার অপকারিতা :
জাকাত আদায় না করার অনেক অপকারিতা রয়েছে।
★ জাকাত আদায়ের উল্লেখিত সকল উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হওয়া। এছাড়াও অনেক উপকারিতা রয়েছে।এ সম্পর্কে একটি আয়াত ও একটি হাদিস উল্লেখ করাই যথেষ্ট মনে করছি।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَ لَا یَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ یَبْخَلُوْنَ بِمَاۤ اٰتٰىهُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ ؕ سَیُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٖ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ وَ لِلّٰهِ مِیْرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ ؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْر

আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তারা যেন কিছুতেই মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল। না, এটা তাদের জন্য অমঙ্গল। যে সম্পদে তারা কৃপণতা করেছে কিয়ামতের দিন তা-ই তাদের গলায় বেড়ি হবে। আসমান ও জমিনের স্বত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সম্পর্কে  বিশেষভাবে অবগত।
সুরা আলইমরান : ১৮০

হাদিস শরিফে এসেছে- ‘যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু সে তার জাকাত দেয়নি কিয়ামতের দিন তা বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত হবে এবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার উভয় অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে, আমিই তোমার ঐ ধন, আমিই তোমরা পুঞ্জিভূত সম্পদ।’ (সহহ বুখারি)

★জকাত কার উপর ফরজ  ?
 স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক মুসলিম নর-নারী-যার কাছে সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর নেসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সে সম্পদের উপর এক বছর অতিবাহিত হয়েছে, তার উপর জাকাত ফরজ।
আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯ বাদায়েউস সানায়ে ২/৭৯,৮২,মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৬/৪৬১-৪৬২

★যে সব সম্পদের উপর জকাত ফরজ হয় :
১) সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে জাকাত ফরজ হয়।
২) স্বর্ণ ও রুপার অলংকার কখনো ব্যবহার করা হোক অথবা না হোক তার উপর জাকাত আসবে।
অলংকার ছাড়া স্বর্ণ ও রুপার অন্যান্য সামগ্রীর উপর‌ও জাকাত আসবে।
সুনানে আবু দাউদ ১/২৫৫;  সুনানে নাসায়ি হাদিস ২২৫৮; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৫৪-৭০৬১,৭০৬৩-৭০৬৫, ৭০৬১,৭০৬৬, ৭১০২ মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ,হাদিস  ৯৯৭৪;৬/৪৬৯-৪৭১

৩) জামা কাপড় ইত্যাদি সামগ্রীতে সোনা-রুপার কারুকাজ থাকলে সেগুলোর জাকাত দিতে হবে।
মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক হাদিস ৭০৬৬; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস    ১০৬৪৮,১০৬৪৯,১০৬৫১
সোনা-রুপা ছাড়া অন্য কোনো মূল্যবান ধাতুর উপর জাকাত ফরজ নয়। হীরা,মনি-মুক্তা ইত্যাদি এগুলোর উপর জাকাত ফরজ নয় ।তবে যদি এগুলো ব্যবসার জন্য হয় , তাহলে মূল্য হিসাব করে জাকাত দিতে হবে।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৬১-৭০৬৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৬/৪৪৭-৪৪৮

৪) টাকা-পয়সার উপর যাকাত ফরজ হয়।
৫) ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, সার্টিফিকেট,ব্যাংক ব্যালেন্স ইত্যাদিও নগদ টাকা-পয়সার মতোই। এসবের উপরও জাকাত ফরজ হয়।
উল্লেখ্য , টাকা পয়সার উপর জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য ব্যবসায় লাগানো শর্ত নয়।বরং টাকা-পয়সা এমনিতে রেখে দিলেও সেগুলোর উপর জাকাত ফরজ হয়।
 আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৬২,৩০০

৬) হজ করার জন্য , ঘরবাড়ি নির্মাণ করার জন্য এবং ছেলে মেয়ের বিবাহ শাদীর জন্য যে টাকা পয়সা জমা রাখা হয় সেগুলোর উপর জাকাত ফরজ হয়। যদি সে অর্থ নেসাবের সমপরিমাণ হয় অথবা নেসাব যোগ্য অন্যান্য সম্পদের সাথে মিলে নেসাব সমপরিমাণ হয় এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস ৭০৩২; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস ১০৩২৫

৭) ব্যবসার নিয়তে কোনো কিছু ক্রয় করলে (চাই তা স্থাবর সম্পত্তি হোক অথবা অস্থাবর সম্পত্তি হোক) এগুলো ব্যবসায়ী দ্রব্য হিসেবে গণ্য হবে এবং তার মূল্যের উপর জাকাত আসবে। ঠিক তেমনিভাবে দোকানে ব্যবসার নিয়তে যে সকল পণ্য রাখা হয়েছে সেগুলোর মূল্যের উপর জাকাত আসবে।
وفى الهندية: الزكاة واجبة فى عروض التجارة كائنة ما كانت إذا بلغت نصابا من الورق والذهب الفتاوى الهندية-1/179

সুনানে আবু দাউদ ১/২১৮; সুনানে কুবরা বায়হাকি ৪/১৫৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক পৃ ১০৮; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক হাদিস ৭১০৩,৭১০৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস ১০৫৫৭, ১০৫৬০, ১০৫৬৩
হিন্দিয়া ,১/১৭৯

৯) মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত টাকা-পয়সা যদি নেসাব পরিমাণ হয় এবং এক বছর স্থায়ী হয়, তাহলে বছর শেষে জাকাত ফরজ হয়।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৯১।

★নেসাবের বিবরণ :
স্বর্ণের ক্ষেত্রে জাকাতের নিসাব হলো বিশ মিসকাল। আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।
সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদিস ৭০৭৭, ৭০৮২
রুপার ক্ষেত্রে নিসাব হলো দু’শ দিরহাম।
আধুনিক হিসাবে সাড়ে বায়ান্ন তোলা
সহিহ বুখারি, হাদিস ১৪৪৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৭৯
এ পরিমাণ সোনা-রুপা থাকলে জাকাত দিতে হবে।
نِصَابُ الذَّهَبِ عِشْرُونَ مِثْقَالًا وَالْفِضَّةِ مِائَتَا دِرْهَمٍ كُلُّ عَشْرَةِ) دَرَاهِمَ (وَزْنُ سَبْعَةِ مَثَاقِيلَ) الخ (أَوْ) فِي (عَرْضِ تِجَارَةٍ قِيمَتُهُ نِصَابٌ) الْجُمْلَةُ صِفَةُ عَرَضٍ وَهُوَ هُنَا مَا لَيْسَ بِنَقْدٍ.
رد المحتار، كتاب الزكاة، باب زكاة المال-2/224-228

★প্রয়োজনের উদ্ধৃত টাকা পয়সা বা ব্যবসায়িক পণ্যের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়, তাহলে জাকাত দিতে হবে।
★তেমনিভাবে সোনা-রুপা বা টাকা-পয়সা কিংবা ব্যাবসায়িক পণ্যের মূল্য যদি এককভাবে নেসাব সমপরিমাণ না হয়, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী রয়েছে - যেগুলো একত্রিত করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য সমপরিমাণ হয়, তাহলে এগুলোর জাকাত দিতে হবে।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস ৬৭৯৭,৬৮৫১,৭০৬৬,৭০৮১ মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস ৯৯৩৭।

★কারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্যদ্রব্য পৃথকভাবে বা সম্মিলিতভাবে নিসাব পরিমাণ ছিলো, বছরের মাঝে এ জাতীয় আরো কিছু সম্পদ কোনো সূত্রে পাওয়া গেলো, এক্ষেত্রে নতুন প্রাপ্ত সম্পদ পুরাতন সম্পদের সঙ্গে যোগ হবে এবং পুরাতন সম্পদের বছর পূর্ণ হওয়ার পর সমুদয় সম্পদের জাকাত দিতে হবে। বছরের মাঝে যা যোগ হয়েছে তার জন্য পৃথক বছর পূর্ণ হওয়া লাগবে না।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস ৬৮৭২,৭০৪০,৭০৪৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা , হাদিস ১০৩২৫,১০৩২৭।

★ভেড়া বা ছাগল প্রভৃতির জাকাতের নেসাব :
১) ১ থেকে ৩৯টি পর্যন্ত যাকাত প্রযোজ্য নয়।
২) ৪০থেকে ১২০টি পর্যন্ত একটি ভেড়া/ছাগল জাকাত দিতে হবে।
৩) ১২১ থেকে ২০০টি পর্যন্ত দুইটি ভেড়া/ছাগল জাকাত দিতে হবে।
৪) ২০১ থেকে ৩০০টি পর্যন্ত ৩টি ভেড়া/ছাগল জাকাত দিতে হবে।
এর অতিরিক্ত প্রতি ১০০টির জাকাত
১টি করে ভেড়া/ছাগল দিতে হবে।

★গরু, মহিষ ও অন্যান্য গবাদি পশুর জাকাত আদায়ের নিয়ম :
১) ১ থেকে ২৯টি পর্যন্ত জাকাত প্রযোজ্য নয়।
২) ৩০ থেকে ৩৯টি পর্যন্ত এক বছর বয়সী ১টি বাছুর জাকাত দিতে হবে।
৩) ৬০টি এবং ততোধিক প্রতি ৩০টির জন্য ১ বছর বয়সী এবং প্রতি ৪০টির জন্য ২ বছর বয়সী বাছুর জাকাত দিতে হবে।

★সরকারী প্রতিষ্ঠানে বা যে সকল কর্পোরেশনে সরকারী নিয়মানুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তন করা হয়, উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের কর্তৃনকৃত টাকার উপর জাকাত ওয়াজিব হবে না। তবে এই টাকা গ্রহণ করার পর একবছর পূর্ণ হলে সম্পূর্ণ টাকার উপর জাকাত প্রদান করতে হবে।

★ব্যবসার জন্য গরু বকরি বা মুরগির ফার্ম করা হয় । তো এই ফার্মের গরু, বকরি ও মুরগির উপর জাকাত আসবে না। বরং এগুলোর বিক্রিত মূল্যের উপর জাকাত আসবে।
 ফাতাওয়া উসমানি : ২/৩৯

★বীমা কোম্পানিতে যে পরিমাণ টাকা রাখা হয়, সে টাকার জাকাত আদায় করতে হবে।
 ফাতাওয়া উসমানি : ২/৩৯

★কম্পানির লেনদেন যদি বৈধ হয় , তাহলে তার শেয়ার ক্রয় করা জায়েজ। এ ক্ষেত্রে শেয়ারের মূল্যের উপর জাকাত আসবে।
ফাতাওয়া উসমানি : ২/৩৯

★সিকিউরিটি মানি ও অ্যডভান্সের জাকাতের বিধান :
ভাড়াদাতা ভাড়াগ্রহীতা থেকে দুই পদ্ধতিতে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে থাকে।
 ১) ভাড়াদাতা জামানত হিসেবে ভাড়াগ্রহিতা থেকে যে টাকাটা গ্রহণ করে থাকে, ভাড়ার চুক্তি শেষে তা আবার ভাড়াগ্রহিতাকে ফেরত দিয়ে দিতে হয়, যাকে সিকিউরিটি মানি বলে। ২) এককালীন গ্রহণ করা টাকা প্রতি মাসেই কিছু কিছু করে ভাড়া হিসাবে কাটা হয়, যাকে অ্যাডভান্স বলে।

সিকিউরিটি মানি ভাড়াদাতার কাছে থাকলেও এর মালিকানা থাকে ভাড়াটিয়ার। কারণ চুক্তি অনুযায়ী ভাড়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে  সিকিউরিটি মানি ভাড়াটিয়া ফেরত পায়। এজন্য সিকিউরিটি মানের জাকাত ভাড়াটিয়া প্রদান করবে।
অন্যদিকে অ্যাডভান্স হিসেবে প্রদানকৃত টাকার মালিকানা ভাড়াটিয়া থেকে ভাড়াদাতার কাছে চলে যায়। তাই তো এ টাকা পরবর্তীতে ফেরত দিতে হয় না। সুতরাং অ্যাডভান্স হিসেবে নেওয়া টাকার জাকাত ভাড়াদাতার উপর আবশ্যক হবে।
জাদিদ ফিকহি মাসায়েল : ১/১৪৭-১৪৮; মালে হারাম আওর উসকে মাসারেফ ওয়া আহকাম : ৮৫

আর যদি টাকাটা শুধু জামানত হিসেবে বা ঋণ হিসেবে দোকান ও বাড়ির মালিকের কাছে রাখা হয়, তাহলে এটাকার মালিক যিনি দোকান বা বাসা ভাড়া নিয়েছেন  তিনিই থাকেন, এজন্য এজন্য এটা কার জাকাত তার উপরে আসবে।

বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার জন্য সিকিউরিটি বাবদ কিছু টাকা রাখতে হয় । এ টাকা প্রতিষ্ঠান শুধু সংরক্ষণ করে ।নির্দিষ্ট মেয়াদ পরে টাকা প্রদানকারীকে ফেরত দেওয়া হয় । এজন্য এটাকার জাকাত প্রদানকারী আদায় করবে।
তেমনি ভাবে ব্যাংকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিকিউরিটি হিসেবে গ্যারান্টি মানি প্রদান করতে হয়। এটাকা একাউন্ট হোল্ডারের মালিকানায় থাকে। নির্দিষ্ট মেয়াদ পরে অ্যাকাউন্ট হোল্ডার গ্যারান্টি হিসেবে প্রদানকৃত উক্ত টাকা উত্তোলন করতে পারে।
এটাকাও জাকাতযোগ্য। এটাকার জাকাত অ্যাকাউন্ট হোল্ডার আদায় করবে।

বছরের শুরু ও শেষে জাকাত সমপরিমাণ  সম্পদ থাকলে বছর শেষে জাকাত দিতে হবে। বছরের মধ্যখানে  সম্পদ কমে গেলেও তাতে কোন সমস্যা নেই। তবে যদি সম্পদ একেবারে নষ্ট হয়ে যায় , তাহলে পুনরায় যখন নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তখন থেকে এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরে জাকাত আদায় করবে।

★ফায়দা★
স্বর্ণের ক্ষেত্রে জাকাতের নিসাব হলো বিশ মিসকাল। রুপার ক্ষেত্রে নিসাব হলো দু’শ দিরহাম। এ পরিমাণ সোনা-রুপা থাকলে জাকাত দিতে হবে।
نِصَابُ الذَّهَبِ عِشْرُونَ مِثْقَالًا وَالْفِضَّةِ مِائَتَا دِرْهَمٍ كُلُّ عَشْرَةِ) دَرَاهِمَ (وَزْنُ سَبْعَةِ مَثَاقِيلَ) الخ (أَوْ) فِي (عَرْضِ تِجَارَةٍ قِيمَتُهُ نِصَابٌ) الْجُمْلَةُ صِفَةُ عَرَضٍ وَهُوَ هُنَا مَا لَيْسَ بِنَقْدٍ.
رد المحتار، كتاب الزكاة، باب زكاة المال-2/224

সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদিস ৭০৭৭, ৭০৮২
সহিহ বুখারি, হাদিস ১৪৪৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৭৯, রদ্দুল মুহতার ,২/২২৪
★এখন আমরা জানবো , ২০ মিসকাল এবং ২০০ দিরহামে কত তোলা হয় ?
বর্তমানে মার্কেটে দুই ধরনের তোলার হিসাব পাওয়া যায়।
১) ১২ মাশায় ১ তোলা। গ্রাম হিসেবে ১২ মাশায় ১১ গ্রাম ৬৬৪ মিলিগ্রাম হয়।
 তো ১২ মাশায় ১ তোলা করে হিসাব করলে ২০ মিসকালে হয় সাড়ে সাত তোলা।
আর ২০০ দিরহামে হয় সাড়ে বায়ান্ন তোলা।
গ্রাম হিসেবে বিশ মিসকাল বা সাড়ে সাত তোলায় ৮৭ গ্রাম ৪৮ মিলিগ্রাম হবে।
আর ২০০ দিরহাম বা সাড়ে বায়ান্ন তোলায় ৬১২ গ্রাম ৩৬ মিলিগ্রাম হবে।

২) ১০ গ্রামে ১ তোলা।এহিসাবে ২০ মিসকালে হবে ৮ তোলা ৭ গ্রাম ৪৮০ মিলিগ্রাম।
গ্রাম হিসাবে ৮৭ গ্রাম ৪৮০ মিলিগ্রাম হবে।
আর ২০০ দিরহামে ৬১ তোলা ২ গ্রাম ৩৬০ মিলিগ্রাম হবে।গ্রাম হিসাবে ৬১২ গ্রাম ৩৬০ মিলিগ্রাম হবে।

★যেসব জিনিসের জাকাত দিতে হয় না :
১) ব্যবহারের আসবাবপত্র এবং গার্হস্থ্য সামগ্রীর জাকাত দিতে হয় না।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদিস ৭০৯৩,৭১০২; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা হাদিস ১০৫৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৫
২) পরিধেয় বস্তুর উপর জাকাত ফরজ হয় না।
রদ্দুল মুহতার ২/২৬৫

৩) নিজ ও পোষ্য পরিজনের খাবার, ব্যবহারের কাপড় ইত্যাদি, বাসস্থান এবং বাহনের উপর জাকাত ফরজ হয় না।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/১৯-২০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা হাদিস ১০২০৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৫

৪) দোকান-পাট , ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের যে সকল পণ্য ব্যবসার জন্য নয় , সেগুলোর উপর জাকাত ফরজ হয় না। তেমনিভাবে দোকান-পাট , ঘর-বাড়ি ইত্যাদি তৈরি করে ভাড়া দিলেও সেগুলোর উপর জাকাত ফরজ নয়। তবে বাড়ার মাধ্যমে অর্জিত টাকা যদি নেসাব পরিমাণ হয় বা অন্যান্য নেসাব যোগ্য সম্পদের সাথে মিলিয়ে নেসাব পরিমাণ হয়, তাহলে সেই টাকার উপর জাকাত আসবে।

★ঋণের উপর জাকাত আসবে কি না ?
ঋণ দুই ধরনের হয়ে থাকে।
১) প্রয়োজনাদি পূর্ণ করার জন্য বাধ্য হয়ে ঋণ নেওয়া ।
২) ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া।
প্রথম প্রকার ঋণ বাদ দেওয়ার পরে যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর জাকাত ফরজ হবে ।অন্যতায় ফরজ হবে না।
মুয়াত্তা মালেক ১০৭; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস ৭০০৩, ৭০৮৬, ৭০৮৯, ৭০৯০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৬/৫৪৭-৫৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৩
কিন্তু যে সকল ঋণ উন্নয়নের জন্য নেওয়া হয়। যেমন কল-কারখানা বানানোর জন্য ঋণ নেওয়া, বিল্ডিং বানিয়ে বিক্রি করা বা ভাড়া দেওয়ার জন্য ঋণ নেওয়া, ব্যবসা সম্প্রসারণ করার জন্য ঋণ নেওয়া ইত্যাদি। তো এ ধরনের ঋণের কারণে জাকাতে কম করা যাবে না।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক , হাদিস ৭০৮৭

★কাউকে যদি টাকা ঋণ দেওয়া হয় অথবা কারো কাছে কোনো পণ্য বিক্রি করার কারণে তার কাছে টাকা পাওনা থাকে, তাহলে সে টাকার উপর জাকাত ফরজ হয়। তবে সে টাকা উসুল হওয়ার আগে জাকাত দেওয়া জরুরি নয়। তবে জাকাত দিলে তা আদায় হয়ে যাবে। যদি পাওনা টাকা কয়েক বছর পরে উসুল হয়, তাহলে উসুল হওয়ার পরে বিগত বছরের জাকাত আদায় করতে হবে।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস ৭১১১-৭১১৩,৭১২১,৭১২৩,৭১২৮, ৭১১৬,৭১২৯,৭১৩১মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ,হাদিস ,১০৩৪৭, ১০৩৫৬,১০৩৪৬,১০৩৫৬

★জাকাত কীভাবে আদায় করবে ?
১)জাকাত আদায় হওয়ার জন্য জাকাত প্রদানকারীর নিয়ত করা জরুরি । এ জন্য জাকাত আদায়ের সময় নিয়ত করে নিবে।
রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮

২)যে সম্পদের উপর জাকাত ফরজ হয়েছে সে সম্পদের ৪০ ভাগের এক ভাগ আদায় করা ফরজ। সম্পদের মূল্য হিসাব করে শতকরা আড়াই টাকা করে জাকাত আদায় করবে।
★ সর্বনিম্ন কত টাকার মালিক হলে জাকাত ওয়াজিব হয় ?
বর্তমান বাজারে ভরি প্রতি রুপার মূল্য ৭৫০ টাকা। মানভেদে কিছু কম বা বেশিও হয়। তাই আনুসাঙ্গিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে রুপার মূল্য ভরি প্রতি মোটামুটি ৭৬২ টাকা ধরলে সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্য  ৪০,০০৫ (চল্লিশ হাজার পাঁচ) টাকা হয়।
সুতরাং কারো কাছে যদি ঋণ ও মৌলিক প্রয়োজন উদ্ধৃত ৪০ হাজার টাকা থাকে অথবা ৪০ হাজার টাকার সমপরিমাণ ব্যবসায়িক পণ্য থাকে , তাহলে তার উপর জাকাত আসবে।
হিসাব করে শতকরা আড়াই টাকা/হাজারে ২৫ টাকা/লাখে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে জাকাত আদায় করতে হবে।
সুনানে নাসায়ি হাদিস ২২৩০-২২৩৩; সুনানে আবু দাউদ হাদিস ১৫৭০-১৫৭২; সুনানে তিরমিযি হাদিস ৬২৩; সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস ১৮০৩ ; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদিস ৭১৩৩-৭১৩৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা হাদিস ১০৫৩৯-১০৫৮১
৪) ৪০ হাজার টাকায় জাকাত আসবে ১০০০ (এক হাজার) টাকা।

★যাদের জাকাত দেওয়া যাবে:
জাকাত কাকে দেওয়া যাবে - এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَ الْمَسٰكِیْنِ وَ الْعٰمِلِیْنَ عَلَیْهَا وَ الْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الْغٰرِمِیْنَ وَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ ابْنِ السَّبِیْلِ ؕ فَرِیْضَةً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ

জাকাত তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও যাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য, যাদের মনোরঞ্জন উদ্দেশ্য তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরের জন্য। এ আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
সূরা তাওবা : ৬০
★জাকাত শুধু মুসলমানদেরকেই দেওয়া যাবে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বা অন্য কোনো অমুসলিমকে জাকাত দেওয়া হলে জাকাত আদায় হবে না। তবে নফল দান-খায়রাত অমুসলিমকেও করা যায়।
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদিস  ৭১৬৬,৭১৬৭, ৭১৭০; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৬/৫১৬-৫১৭

১.ফকির অর্থাৎ যাদের নিকট সন্তান-সন্ততির প্রয়োজন সমাধা করার মত সম্বল নেই অথবা যাদের নিকট জাকাত ফেতরা ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণ অর্থ সম্পদ নেই।
২. মিসকিন অর্থাৎ যারা সম্পূর্ণ রিক্তহস্ত অথবা যাদের জীবিকা অর্জনের ক্ষমতা নেই।
৩.ইসলামী রাষ্ট্র হলে তার জাকাত তহবিলের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ।
৪. যাদের উপর ঋণের বোঝা চেপেছে।
৫. যারা আল্লাহর রাস্তায় শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত।
৬. মুসাফির ব্যক্তি ( বাড়ীতে সম্পদশালী হলেও) সফরে রিক্তহস্ত হয়ে পরলে।
৭.জাকাত দাতার ভাই-বোন, ভাতিজা- ভাতিজী, ভগ্নিপতি, ভাগ্না- ভাগ্নী, চাচা-চাচী, খালা-খালু, ফুফা-ফুফী, মামা-মামী, স্বাশুড়ী, জামাই, সৎ বাপ ও সৎ মা ইত্যাদি (যদি এরা গরীব হয়)।
৮. নিজের গরিব চাকর-নওকর বা কর্মচারীকে দেওয়া যায়। তবে এটা বেতন বাবদ কর্তন করা যাবে না। ( আহকামে জিন্দিগী)
৯. যাদেরকে জাকাত দেওয়া হবে , তাদেরকে জাকাতের টাকার মালিক বানিয়ে দিতে হবে।

★যাদেরকে জাকাত দেওয়া যাবে না:

১) কাফির। ২) নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক এবং তার অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান। ৩)  বনু হাশেমের লোক। ৪) মা, বাবা, দাদা, দাদি, নানা, নানি একইভাবে ওপরের স্তরের কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ যাদের মাধ্যমে দুনিয়ায় এসেছ, তাদেরসহ ওপরের স্তরের কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে না। ৫) নিজের মাধ্যমে যারা দুনিয়ায় এসেছে, অর্থাৎ ছেলে-মেয়ে ও তাদের সন্তানাদি একইভাবে তাদের সন্তানদের জাকাত দেওয়া যাবে না। ৬) মসজিদ, মাদরাসা , রাস্তা, পুল ও  অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজে জাকাতের টাকা ব্যয় করা যাবে না। ৭) স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে জাকাত দিতে পারবে না।
ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৮৮, ১৮৯; তাতারখানিয়া : ৩/২০৬; আদদুররুল মুখতার :৩/২৯৪, ২৯৫)
৮) জাকাতের টাকা দিয়ে মৃত ব্যক্তির কাফনের ব্যবস্থা করা যাবে না।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝার তাওফিক দান করেন, এবং আমল করার তৌফিক দান করেন।
আলোচনা করেছেন
হজরত মাওলানা মুফতী  আবুল বসর সরাইলী হাফীজাহুললা।

No comments:

Post a Comment